হাদি হত্যাকাণ্ড: খুনিদের সীমান্ত পার করাতে জড়িত দুই যুবলীগ নেতা, লেনদেনের চাঞ্চল্যকর তথ্য
🔴 হাদি হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়
হাদির খুনিকে পার করেন যে দুই নেতা—এই তথ্য সামনে আসার পর রাজধানীর আলোচিত রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার ঘটনায় একটি সুপরিকল্পিত পালানোর নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
🕵️♂️ তদন্তে উঠে এসেছে যাদের নাম
মামলার তদন্তে জানা গেছে, খুনিদের সীমান্ত পার করার ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মিরপুর এলাকার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে বাপ্পী। তাকে সহযোগিতা করেন তার ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ইতোমধ্যে আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
🚨 পরিকল্পিতভাবে সীমান্ত পার
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাদি হত্যাকাণ্ডের পরপরই প্রধান শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে সীমান্ত পার করানোর বিষয়টি আগে থেকেই পরিকল্পিত ছিল। ফয়সাল ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং আলমগীর আদাবর থানা যুবলীগের কর্মী।
ঘটনার রাতেই তারা ঢাকা ত্যাগ করে একাধিক যানবাহন পরিবর্তনের মাধ্যমে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তে পৌঁছান এবং সেখান থেকে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যান।
💸 মাত্র ৫ হাজার টাকায় পারাপার
তদন্তে আরও জানা যায়, হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকায় টাকার বিনিময়ে অবৈধ পারাপারের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন দালাল সক্রিয় রয়েছে। তাদের মধ্যে ফিলিপ স্নাল নামে এক দালালের নাম উঠে এসেছে, যার বাড়ি সীমান্তসংলগ্ন ভুটিয়াপাড়া গ্রামে।
হাদি হত্যার কিছুক্ষণ পর তাইজুল ইসলাম ভারত থেকে ভগ্নিপতি আমিনুলকে ফোন করে জানান, তিনি ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এরপর আমিনুল দ্রুত ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানায়—সেই রাতেই দুই ব্যক্তিকে সীমান্ত পার করাতে হবে।
পরবর্তীতে তাইজুলের নির্দেশে আমিনুল ৫ হাজার টাকা পাঠান ফিলিপকে। ওই অর্থের বিনিময়েই ফয়সাল ও আলমগীরকে নিরাপদে সীমান্ত পার করানো হয়।
আরও পড়ুনঃ চীনের মাও সে তুং-এর ছবি কাটতে গিয়ে ৫০ হাজার ইউয়ান নষ্ট করল শিশু
🕯️ হাদির হত্যার পটভূমি
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।
পরবর্তীতে তার মরদেহ দেশে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হয়।

