জীবনযাপন

ঘরের এই ছোট ভুলেই অর্ধেক কমে যাচ্ছে আপনার ওয়াইফাই স্পিড! জানুন সহজ সমাধান

Spread the love

আপনার কি মনে হচ্ছে বাসার ইন্টারনেট আগের চেয়ে অনেক ধীর? ভিডিও দেখার সময় বারবার বাফারিং হচ্ছে, অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে ল্যাগ করছে, কিংবা ঘরের এক কোণে গেলেই নেটওয়ার্ক হারিয়ে যাচ্ছে? দোষটা অনেকেই ইন্টারনেট কোম্পানির ঘাড়ে চাপান, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন—বাস্তবে সমস্যার মূল অনেক সময় লুকিয়ে থাকে আমাদের নিজস্ব ঘরের ভেতরেই

বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘরের ভেতরের কিছু সাধারণ বস্তু আপনার ওয়াইফাই স্পিড অর্ধেক পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। আয়না, ধাতব আসবাব, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ব্লুটুথ ডিভাইস বা পানিভর্তি অ্যাকুয়ারিয়াম—এসব জিনিস ওয়াই-ফাই সিগনালের পথে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে ইন্টারনেটের গতি হঠাৎ করেই কমে যায় এবং পুরো নেটওয়ার্ক অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে।

তবে চিন্তার কিছু নেই! কারণ, সমস্যার সমাধান খুবই সহজ। শুধু রাউটারকে সঠিক জায়গায় বসানো এবং কিছু ছোট পরিবর্তন করলেই ঘরে পাবেন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত ও স্থিতিশীল ওয়াইফাই স্পিড

আরও পড়ুনঃ YouTube-এর জনপ্রিয় ভারতীয় ওয়েব সিরিজ: গল্প ও অভিনয়ে মন জয় করা ৫টি অসাধারণ শো
🏠 ঘরের ৮টি জিনিস যা কমিয়ে দেয় ওয়াইফাই স্পিড

১. আয়না:

আয়না দেখতে সুন্দর হলেও এটি ওয়াই-ফাই সিগনালের সবচেয়ে বড় শত্রু। আয়নার প্রতিফলিত পৃষ্ঠ সিগনালকে ফিরে পাঠিয়ে দেয়, ফলে তরঙ্গ দুর্বল হয়ে যায় এবং ইন্টারনেট ধীরগতির হয়।

২. ধাতব আসবাবপত্র:

ঘরে থাকা ধাতব আলমারি, টেবিল বা চেয়ার ওয়াই-ফাই সিগনাল আটকে দেয়। মেটাল বস্তু ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ শোষণ করে ফেলে, ফলে সিগনাল ঘরের অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে পারে না।

৩. মাইক্রোওয়েভ ওভেন:

মাইক্রোওয়েভ ওভেন ২.৪ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে, যা অনেক ওয়াই-ফাই রাউটারের ফ্রিকোয়েন্সির সঙ্গে মিলে যায়। ফলে দুই তরঙ্গের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে এবং স্পিড অর্ধেকে নেমে আসে।

৪. ব্লুটুথ ডিভাইস:

হেডফোন, স্পিকার বা স্মার্টওয়াচের মতো ব্লুটুথ ডিভাইসও একই ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে। এতে ওয়াই-ফাইয়ের সঙ্গে হালকা বিঘ্ন ঘটে, যার ফলে কানেকশন বারবার বিচ্ছিন্ন হয় বা গতি কমে যায়।

৫. অ্যাকুয়ারিয়াম:

পানিভর্তি অ্যাকুয়ারিয়াম ওয়াই-ফাই তরঙ্গ শোষণ করে ফেলে। ফলে আশপাশে তৈরি হয় ‘ডেড জোন’—যেখানে ইন্টারনেট একেবারেই কাজ করে না।
৬. ভারী আসবাব:

বড় সোফা, খাট বা কাঠের আলমারির মতো ভারী বস্তু রাউটারের সিগনালকে বাধা দেয়। রাউটারকে যদি এমন কিছুর পাশে রাখা হয়, তাহলে সিগনাল দেয়ালের ওপাশে যেতে পারে না।

৭. মোটা দেয়াল:

ইট বা কংক্রিটের মোটা দেয়াল ওয়াই-ফাই তরঙ্গকে দুর্বল করে দেয়। তাই রাউটার যদি ঘরের এক কোণে থাকে, অন্য ঘরে সিগনাল দুর্বল হয়ে যায়।

৮. অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি:

টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর বা কর্ডলেস ফোনের মতো যন্ত্রপাতি ওয়াই-ফাই সিগনালে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ইন্টারফেরেন্স তৈরি করে, যা নেটওয়ার্কে সমস্যা ঘটায়।


⚡ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ: কিভাবে বাড়াবেন ওয়াইফাই স্পিড

১️⃣ রাউটার সবসময় ঘরের মাঝখানে রাখুন, যাতে সিগনাল চারদিকে সমানভাবে ছড়ায়।
২️⃣ রাউটারকে মেঝেতে নয়, বরং একটু উঁচু স্থানে রাখুন।
৩️⃣ আয়না, ধাতব বস্তু ও ভারী ইলেকট্রনিক পণ্যের কাছ থেকে দূরে রাখুন।
৪️⃣ রাউটারের ফার্মওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন।
৫️⃣ প্রয়োজন হলে ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার ব্যবহার করতে পারেন।

প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এই ছোট পরিবর্তনগুলোই আপনার ইন্টারনেট অভিজ্ঞতায় বড় পার্থক্য আনবে। আপনি যদি স্মার্ট টিভি, ল্যাপটপ, বা স্মার্টফোনে দ্রুত ইন্টারনেট চান—তাহলে আজই ঘরের এই ছোট ভুলগুলো সংশোধন করুন।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, ভালো ওয়াই-ফাই পারফরম্যান্সের জন্য রাউটার কেনার সময় ডুয়াল-ব্যান্ড বা ট্রাই-ব্যান্ড সমর্থিত ডিভাইস নেওয়া ভালো। এটি একই সঙ্গে একাধিক ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করতে পারে, ফলে সিগনাল আরও স্থিতিশীল থাকে।

👉 আপনার ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সম্পর্কে আরও জানতে পারেন বাংলালিংক অফিসিয়াল সাইটে অথবা গ্রামীণফোন ওয়েবসাইটে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *